শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জাবিতে জুনিয়রকে চড়-থাপ্পড় মারলেন সিনিয়ররা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, জাবি
প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

জাবিতে জুনিয়রকে চড়-থাপ্পড় মারলেন সিনিয়ররা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) হলের কক্ষ না ছাড়া এবং কক্ষে মাদক সেবন ও উচ্চস্বরে গান বাজানোর প্রতিবাদ করায় জুনিয়রকে মারধর করেছেন সিনিয়ররা। এ ঘটনার বিচার চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী।


বিজ্ঞাপন


এর আগে, রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত শেখ রাসেল হলের ৮১৬ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী মো. মাহিবি রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৫০তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। 

আর অভিযুক্তরা হলেন—কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের প্রিতম সাহা, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মাহবুব রহমান উৎসব ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের মির্জা তৌফিক রায়হান এবং পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের মুশফিকুর রহমান পরশ। তারা সবাই শেখ রাসেল হলে অবস্থান করেন এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে প্রিতম ও প্রকাশ ভুক্তভোগী মাহিবির রুমমেট।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, হলের ৮১৬ নম্বর কক্ষে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৫০তম ব্যাচের দু’জন ও সিএসই বিভাগের ৫০তম ব্যাচের দুজনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে হল চালু হওয়ার পর সিএসই বিভাগের ১৫ থেকে ২০ জন গিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দুজনকে অন্য কক্ষে যেতে বলেন। তখন তারা অন্য কক্ষে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে সিএসই বিভাগের দুজনকে অন্য কক্ষে পাঠিয়ে একই বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের প্রিতম সাহা ও প্রকাশ মিত্র ৮১৬ নম্বর কক্ষে উঠেন। এরপর থেকে প্রিতম ও প্রকাশ নিয়মিত কক্ষে মাদক সেবন করেন। এছাড়া অন্য কক্ষের বন্ধুদের ডেকে এনে কার্ড খেলেন, রাতভর সাউন্ডবক্সে গান বাজান ও মাদক সেবন করেন। 


বিজ্ঞাপন


ওই কক্ষে মাদক সেবনের একটা ভিডিও ঢাকা মেইলের হাতে এসেছে। 

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, গত সোমবার রাতে ইউটিউবে ভিডিও দেখে অ্যাসাইনমেন্ট করছিলেন মাহিবি। এ সময় প্রিতম সাহা তাকে হেডফোন ব্যবহার করতে বললেও পূর্ব ক্ষোভের ফলে তিনি কথা শোনেননি। তখন প্রিতম সাহা অভিযুক্ত অন্য তিনজনকে তাদের কক্ষে ডেকে নিয়ে আসেন। কক্ষে গিয়ে মাহিবিকে দুটি থাপ্পড় মারেন মুশফিকুর রহমান পরশ। পরে উৎসব গালিগালাজ করে তাকে আরও দুটি থাপ্পড় মারেন। এছাড়া কোথাও অভিযোগ করলে অবস্থা আরো খারাপ হবে বলে হুমকি দেন। এসময় তারা হলের প্রাধ্যক্ষকেও গালিগালাজ করেন।

ভুক্তভোগী মো. মাহিবি রহমান বলেন, আমাদের পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্ট থাকলেও তারা মাদক সেবন ও উচ্চস্বরে গান বাজায়। আমরা প্রতিবাদ করলেও কর্ণপাত করেনা। তাদের খারাপ ব্যবহার ও হুমকির জন্য আমরা সবসময় মানসিক যন্ত্রণায় থাকি। আমাদের পরীক্ষার আগের দিন তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধুবান্ধবকে ডেকে এনে সাউন্ডবক্সে গান বাজায় ও বিরক্ত করে। তাই সেদিন আমাকে ভিডিও বন্ধ করতে বললেও আমি শুনিনি। ফলে তারা অন্য বন্ধুদের ডেকে এনে আমাকে মারধর করে।

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে মুশফিকুর রহমান পরশ সাংবাদিকদের বলেন, এক সঙ্গে খেলাধুলা করার কারণে প্রিতম ভাইয়ের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। গতকাল রাতে ভাই যখন জানালেন যে রুমমেট জুনিয়র তার কথা শুনছে না, তখন আমরা গিয়ে তাকে সতর্ক করেছি ও বুঝিয়েছি। এসময় তার গায়ে হাত তোলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আরেক অভিযুক্ত প্রিতম সাহা বলেন, মাহিবি জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও তার আচরণে যথেষ্ট সমস্যা ছিল। আমরা রুমে ধুমপান করি সত্য, তবে অন্য মাদক সেবন করি না। তাকে জোরে ভিডিও ছাড়তে নিষেধ করেছি। সে না শোনায় আমার বন্ধুরা তাকে উচ্চস্বরে ধমক দিয়েছে। তবে তাকে একদমই মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ তাজউদ্দিন শিকদার বলেন, তাদের লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আমি হলে ওয়ার্ডেন ও অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। মারধরের ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর