রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই, নির্যাতিতাকে সেই ছাত্রলীগ নেত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:৩৭ পিএম

শেয়ার করুন:

তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই, নির্যাতিতাকে সেই ছাত্রলীগ নেত্রী
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন ছাত্রীকে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী। নির্যাতিত ছাত্রী নিজেই সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলে বের হয়ে সাংবাদিকদের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি জানান নির্যাতিত ওই ছাত্রী।


বিজ্ঞাপন


সাংবাদিকদের তিনি জানান, ক্ষমা চেয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী তাকে বলেছেন- ‘আমার সাথে এ রকম করো না। তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই।’

বুধবার অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচজনকে নির্যাতিত ওই ছাত্রীর মুখোমুখি করা হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিট থেকে বিকেল পৌনে ৪টা অবধি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক রেবা মন্ডলের কক্ষে এ নিয়ে বসেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া নির্যাতিত ছাত্রীর বাবা আতাউর রহমান ওই সময়ে কক্ষের বাইরে ছিলেন।

islamic UVপাবনার গ্রামের বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে দুপুরে ক্যাম্পাসে এসে প্রথমে তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেন নির্যাতিত ওই ছাত্রী। পরে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক রেবা মন্ডলের কক্ষে নেওয়া হয়। এর পরপরই নির্যাতনে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী, তাবাসসুম ইসলামসহ পাঁচজনকে ওই কক্ষে ডেকে নেওয়া হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধানের কক্ষ থেকে বেরিয়ে নির্যাতিত ওই ছাত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কে কী করেছেন এ বিষয়ে ম্যাম-স্যাররা জানতে চাইলেন। আমি সেটা বলেছি এবং তাঁদের চিনিয়ে দিয়েছি।’


বিজ্ঞাপন


অভিযুক্তরা কিছু বলেছেন কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ বলেছেন।... ‘আমার সাথে এ রকম কোরো না। তোমার হাতে-পায়ে ধরে মাফ চাই।’ অন্তরা (সানজিদা) আপু রিকোয়েস্ট করল। কিন্তু আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে, সেটাতে আমি অটল ছিলাম।’

>> আরও পড়ুন: ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন

তবে তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাতের পর অভিযুক্তরা ছাড়াও কমিটির কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। সাংবাদিকদের অনেকটা এড়িয়ে গিয়েই স্থান ত্যাগ করেন সাবাই। এ সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদাকে সাংবাদিকরা একাধিক প্রশ্ন করলেও কোনো জবাব না দিয়ে দ্রুত নিজের এক বন্ধুকে নিয়ে একটি গাড়িতে উঠে চলে যান তিনি।

এ বিষয়ে হল তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. আহসানুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, তদন্তের স্বার্থে ভুক্তভোগীকে আজও ডাকা হয়। আমরা তার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছি। অভিযুক্তদের সঙ্গেও কথা বলব।

>> আরও পড়ুন: এবার শাবিপ্রবিতে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ, ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে চাই না।

সার্বিক বিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাজ্জাদুর রহমান টিটু বলেন, আমরা ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দিয়ে আলাউদ্দিন নগর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছি। পরে তারা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাসায় যান।

গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্রীকে রাতভর র‌্যাগিং ছাড়াও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগ সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও ৭ থেকে ৮ জন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সেই ছাত্রী। পরে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ছাড়াও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এছাড়াও ঘটনাটি নিয়ে একটি রিট দায়ের করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের পাশাপাশি কিছু নির্দেশনাও দেন হাইকোর্ট। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভুক্তভোগী ছাত্রীসহ অভিযুক্তদের ডেকেছিল তদন্তে কমিটি।

প্রতিনিধি/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর