শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নারী বলেই সব পারতে হবে কেন? 

ফারদীন হক জ্যোতি
প্রকাশিত: ০৮ মার্চ ২০২৩, ০৮:৪৩ এএম

শেয়ার করুন:

নারী বলেই সব পারতে হবে কেন? 

নারী। কখনো মা কখনো স্ত্রী-কন্যা। কখনোবা খুব প্রিয়জন হিসেবে বিভিন্ন রূপে থেকে গেছে পুরুষের পাশাপাশি এই পৃথিবীতে। পরিবার গঠনের পাশাপাশি সামাজিক অর্থনৈতিক দিকেও নারীর ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। একটা সময় ছিল আমাদের সমাজের নারী শুধু ঘরে থেকেই কাজ করতো। তাদের প্রধান কাজ ছিল সংসার সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের দেখাশোনা করা। সময় পাল্টেছে, জীবনের তাগিদে বর্তমানে নারীদের কাজ করতে হচ্ছে ঘরে বাইরে। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে ছন্দে কাজ করছে একজন নারীও। 

পুরুষশাসিত এই সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের ছোট করে দেখা হয়। দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয় তাদের দিগ্বিজয়ী শক্তিকে। তাদেরকে সম্মুখীন হতে হয় অনেক সহিংসতার। এ যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র। প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করার এক নীরব যুদ্ধ এটি। আমাদের বর্তমান সামাজিক নীতি অনুসারে অধিকাংশের মাথায় যেন গেঁথে দেওয়া হয়েছে নারী মানেই তাদের সব পারতেই হবে। তাদের ঘর সামলে সামলাতে হবে বাহির। বাইরের কাজ যদি হয় নারী পুরুষ উভয়ের তাহলে ঘরের কাজের ভার শুধু নারীর কেন হবে? 


বিজ্ঞাপন


womenনারী বলেই তাকে সব পারতে হবে বা করতেই হবে এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার এখনই সময়। নারীরা যেহেতু জীবিকার তাগিদে কাজ করছে বিভিন্ন সেক্টরে, সেক্ষেত্রে তাদের প্রতি একটু সহানুভূতি প্রদর্শন করা সবারই দায়িত্ব। স্বামী-স্ত্রী যদি দুইজনই কর্মজীবী হয়ে থাকেন তাহলে দুইজন ঘরের কাজ ভাগাভাগি করে করতে পারেন। সন্তানের দেখভাল করার ক্ষেত্রেও বাবা এবং মা দুইজনেরই সমান দায়িত্ব থাকা উচিৎ। পরিবারের বিভিন্ন রকম কাজে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সহযোগিতার হাত বাড়িতে দেওয়া দরকার। 

কর্মজীবী অনেক নারী অনেকাংশেই একটা অপরাধবোধে ভোগেন। এই অপরাধবোধ তৈরি হয় তাদের পারিপার্শ্বিক সামাজিক পারিবারিক কটু কথার জন্য। এমনকি নারী বলেই হঠাৎ করে সন্তানের অসুস্থতার দায় দেওয়া হয় তার মাথায়। এই অসুস্থতার কারণ হিসেবে দেখানো হয় নারীর চাকরিকে। কিন্তু মা ছাড়াও একটা শিশুকে দেখার দায়িত্ব পরিবারের সবার। 

womenকর্মক্ষেত্রেও অধিকাংশ সময় মনে করা হয় একজন বিবাহিত নারী তার সংসার আছে বলেই কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন না, যা মূলত একটি ভুল ধারণা। নিজেকে পরিবারে ও কর্মক্ষেত্রে প্রমাণ করার জন্য নারীরা তাদের নিজের যত্ন নেয় না। এতে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সহ মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পরে নারীরা। 

‘আমি নারী তাই সবই আমাকেই পারতে হবে’— এই বিশ্বাস থেকে নিজেদের মুক্ত করতে হবে। পরিবারের সব সদস্যকে পারিবারিক কাজে সাহায্য সহযোগী করার জন্য এগিয়ে আসা উচিৎ। আপনার সহকর্মী বা প্রিয় মানুষটি যদি একজন নারী হয় তাহলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শন করার চেষ্টা করুন।


বিজ্ঞাপন


এনএম/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর