শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দিয়াবাড়িতে নীলগিরির ফ্লেভার

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

দিয়াবাড়িতে নীলগিরির ফ্লেভার

রোববার সকাল নয়টা। পূব আকাশে সূর্য উঠলেও চারপাশ কুয়াশায় ঢাকা। বিশ গজ দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। কিছুদূর তাকালে শুধুই সাদা চাদর। দেখে নীলগিরির মতো মনে হলেও আসলে তা নয়। এটি ঢাকার মিরপুরের দিয়াবাড়ীর দৃশ্য।

সোমবার সাতসকালে দিয়াবাড়িতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। সকাল ৯টা ১১ মিনিটে মোবাইলের আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য পেতে চোখ বুলাতেই দেখা গেল, এই এলাকার তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঠাণ্ডার তীব্রতা না থাকলেও হাত-পা এবং কানে যেন বরফ লাগিয়ে দিচ্ছিল কেউ। এর পথ ধরে যাতায়াতকারী বেশিরভাগ লোকজনের মাথায় শীতের টুপি এবং গায়ে গরম কাপড়।


বিজ্ঞাপন


এই এলাকায় এতটাই কুয়াশা পড়েছে যে রাস্তাঘাটে চলাচল করার জন্য সিএনজি ও অটো চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছেন।

আসলাম সরকার গাবতলি থেকে এসেছিলেন বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ধরতে। ইচ্ছে ছিল সাত সকালে গিয়ে হুজুরের বয়ান শুনবেন পাশাপাশি আখেরি মুনাজাত করে দুপুরের দিকে বাসায় ফিরবেন। কিন্তু তার সেই ইচ্ছেতে যেন ভাটা পড়ে গেল দিয়াবাড়ি এলাকায় এসে কুয়াশার চাদরে মোড়া আর হালকা ঠাণ্ডা বাতাস অনুভব করে। আসলামের সাথে থাকা কয়েকজন দিয়াবাড়ির দিকে ছুটলেও তিনি এই এলাকায় এসে আর যেতে পারলেন না। রিক্সা থেকে নেমে বলতে শুরু করলেন আর যেতে পারবো না। এই দিয়া বাড়ি হয়ে উত্তরা গেলে আমার শ্বাসকষ্ট বাড়বে। 

diabari dhaka

এ সময় তার সাথে কথা হয় ঢাকা মেইলের এই প্রতিবেদকের। তিনি জানালেন, ভেবেছিলেন সকাল নয়টার দিকে বের হলে আকাশে রোদের দেখা মিলবে এবং তিনি বিশ্ব ইজতেমার শরিক হতে উত্তরা যেতে পারবেন। কিন্তু দিয়াবাড়ি এলাকায় এসে তার ধারণা পাল্টে গেল।


বিজ্ঞাপন


সিদ্ধ আলু মসলায় মাখিয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতা রাজু আহমেদ। তিনি বলছিলেন, এরকম কুয়াশা এর আগে কখনো দেখিনি। কুয়াশায় কোন পানি নাই শুধু ধোঁয়া। যেন কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে চারিপাশে।

মিরপুরের পল্লবী হয়ে বৃন্দাবন এরপর দিয়াবাড়ি হয়ে বিশ্ব ইজতেমার দিকে ছুটছে শত শত মানুষ। তবে সকাল ৯ টায় বৃন্দাবন এলাকায় এসে দিয়াবাড়ির প্রবেশ মুখে কুয়াশার এমন দৃশ্য দেখে কেউ বললেন, এ যেন আরেক নীলগিরি।

মিরপুর ১০ এলাকা থেকে আসা রবিউল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন দাঁড়ালেন বৃন্দাবন এলাকার মোড়ে। রিকশা থেকে নামতেই তারা বেশ অভিভূত হয়ে গেলেন। তাদের মাঝে থেকে নাজমুল নামে এক যুবক বলে উঠলেন, ভাইরে আমরা তো নীলগিরিতে চলে আসছি। দিয়া বাড়িতে যেন আরেক নীলগিরির ফ্লেভার। 

diabari

রিকশাচালক কাদের মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, কয়েকদিন থেকে এই এলাকায় কুয়াশা দেখা যাচ্ছে কিন্তু আজ যে কুয়াশা আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটা কয়েকদিনের থেকে বেশ বেশি লাগছে।

বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ধরতে সকাল থেকে দিয়াবাড়ি হয়ে উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরে যাওয়ার জন্য মানুষের ঢল নামে। শত শত মানুষ মিরপুর পল্লবী হয়ে এসে দিয়াবাড়ি দিয়ে ছুটছেন উত্তরার দিকে। বৃন্দাবন এলাকা থেকে টঙ্গী সুইসগেট পর্যন্ত মাইক্রোবাস এবং লেগুনা চালকরা বিশ্ব ইজতেমায় যেতে ইচ্ছুক মানুষদের যাত্রী হিসেবে নিয়ে ছুটছেন।

অটো চালক সাব্বির আহমেদ জানালেন, গত কয়েকদিন থেকে কুয়াশা ছিল। এই এলাকায় কিন্তু সকাল নয়টার পরে রোদ উঠলে ঝকঝক হয়ে গেছে শুধু আসবে ব্যতিক্রম। কুয়াশার কারণে তাদেরকে যাত্রী নিয়ে উত্তরার পথে রওনা হতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। পথঘাট তেমন পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে না।

এমআইকে/একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর