শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মিথ্যার সম্পর্ক সব পাপের সঙ্গে

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৫০ পিএম

শেয়ার করুন:

যে পাপকে বেশি ঘৃণা করতেন নবীজি

মিথ্যা খুবই ঘৃণিত অভ্যাস। হাদিসে মুনাফিক চেনার যে কয়টি সূত্র তুলে ধরা হয়েছে, তার মধ্যে মিথ্যা অন্যতম। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি: ১. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে. ২. যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং ৩. আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে। (বুখারি: ৩৩)

মিথ্যার সঙ্গে সকল পাপের সম্পর্ক রয়েছে। পাপীর বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন মিথ্যা। মিথ্যা ছাড়া সে চলতে পারে না। যেকোনো পাপ সমাজে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে মিথ্যার ওপর ভর করে। হাদিসের ভাষায় মিথ্যা গুনাহের পথ দেখায়, আর গুনাহ দেখায় জাহান্নামের পথ।


বিজ্ঞাপন


ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সত্যকে আঁকড়ে ধরো। কারণ সত্য পুণ্যের পথ দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের পথ দেখায়। কোনো ব্যক্তি সর্বদা সত্য কথা বললে এবং সর্বদা সত্যের অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে লিখিত হয়। আর তোমরা মিথ্যা থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকো। কারণ মিথ্যা পাপাচারের রাস্তা দেখায় আর পাপাচার জাহান্নামের রাস্তা। কোনো ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যা কথা বললে এবং সর্বদা মিথ্যার অনুসন্ধানী হলে সে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদীরূপে পরিগণিত হয়।’ (মুসলিম: ২৬০৭)

আরও পড়ুন: হিংসার আগুনে দগ্ধ হয় হিংসুক নিজেই

প্রিয়নবী (স.) মিথ্যাকে খুব বেশি ঘৃণা করতেন। কারো মধ্যে মিথ্যা বলার প্রবণতা থাকলে তাদের ভিন্ন চোখে দেখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, মিথ্যা থেকে অধিক ঘৃণিত চরিত্র রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে আর কিছুই ছিল না। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর সামনে কেউ মিথ্যা বললে তা অবিরত তাঁর মনে থাকত, যে পর্যন্ত না তিনি জানতেন যে মিথ্যাবাদী তাঁর মিথ্যা কথন থেকে তাওবা করেছে। (তিরমিজি: ১৯৭৩)

খুব ঘৃণিত ও ভয়ঙ্কর পাপ হওয়ার কারণেই হেদায়াত থেকে বঞ্চিত হয় মিথ্যুকরা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে হেদায়াত দেন না, যে সীমা লঙ্ঘনকারী, মিথ্যাবাদী’। (সুরা গাফির: ২৮)


বিজ্ঞাপন


এমনকি মিথ্যুকরা আল্লাহর অভিশাপপ্রাপ্ত। মুবাহালাসংক্রান্ত আয়াতে এসেছে, ‘অতঃপর আমরা সবাই (আল্লাহর কাছে) এ মর্মে প্রার্থনা করি যে মিথ্যুকদের ওপর আল্লাহর লানত পতিত হোক।’ (সুরা আলে ইমরান: ৬১)

আরও পড়ুন: গিবতের গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে এই ৫টি কাজ করুন

তাই কথা বলার সময় সতর্ক থাকতে হয় মুমিনদের। যেন রসিকতার ছলে বা অনুমানের ভিত্তিতে মুখ দিয়ে মিথ্যা বেরিয়ে না আসে। মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘(অনুমানভিত্তিক) মিথ্যাচারীরা ধ্বংস হোক।’ (সুরা জারিয়াত: ১০) রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘কোনো লোকের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে (যাচাই না করে) তাই বলে বেড়ায়’। (সহিহ মুসলিম: ৫)

কারো নেতা যেন মিথ্যাবাদী না হয়, সেজন্য বিশেষ সজাগ থাকার নির্দেশনা রয়েছে কোরআন ও হাদিসে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কাজেই আপনি মিথ্যাবাদীদের অনুসরণ করবেন না।’ (সুরা আল কলম: ৮) রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তোমরা মুনাফিককে নেতা হিসাবে গ্রহণ করো না। কেননা মুনাফিক যদি নেতা হয়, তাহলে তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে অসন্তুষ্ট করলে।’ (আবু দাউদ: ৪৯৭৭; মেশকাত: ৪৭৮০)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সত্যবাদিতা অবলম্বন করার এবং মিথ্যা থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর