শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ক্রিকেটের নব জাগরণঃ ২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৫:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

ক্রিকেটের নব জাগরণঃ ২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

আনন্দ, উত্তেজনা, রোমাঞ্চের এক নতুন ক্রিকেট অধ্যায়ের আবির্ভাব দিয়ে ২০০৭ সালে শুরু হয় টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সেই প্রথম আসরটি ছিল উত্তেজনা ও রোমাঞ্চে ভরপুর। এই আসরে ঘটেছে একের পর ইতিহাস লেখার মতো ঘটনা। ভারতের যুবরাজ সিংয়ের ৬ বলে ৬ ছক্কা কিংবা ভারত-পাকিস্তানের মতো দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচে অদ্ভুতভাবে মীমাংসা সব মিলিয়ে নয়া এক জাগরণ দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। 

এরপর পেরিয়ে গেছে এক যুগের বেশি সময়। বর্তমানে এ ফরম্যাটটি ক্রিকেট দুনিয়ার সবচেয়ে বড় উন্মাদনার উৎস। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট নতুন করে বদলে দিয়েছে ব্যাট-বলের এই লড়াইকে। যার প্রভাব পড়েছে টেস্ট ও ওয়ানডে সংস্করণে।  


বিজ্ঞাপন


উদ্ধোধনী ম্যাচ থেকেই উত্তাপ ছড়াতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ১০ ছক্কায় ৫৭ বলে ১১৭ রান করে প্রথম ম্যাচে ক্রিস গেইল টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভবিষ্যত জাগরণের আভাস দেন। তবে ২০৫ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ম্যাচ জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হার্শেল গিবস ও জাস্টিন কেম্পের ব্যাটিং দৃঢ়তায় সেই ম্যাচ ১৪ বল হাতে রেখেই জয় পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। 

টি টোয়েন্টির রোমাঞ্চ সেখানেই শেষ হয়ে যায় নি। সুপার এইটের ম্যাচে যুবরাজ করেন এক অনন্য কীর্তি। ইনিংসের ১৯ তম ওভারে ইংল্যান্ডের স্টুয়াট বর্ডের ৬ বলে ৬ ছক্কা হাঁকান তিনি। ১২ বলে করেন হাফ সেঞ্চুরি। জন্ম দেন ক্রিকেট বিশ্বে এক নতুন রেকর্ডের।

তবে প্রথম বিশ্বকাপে যে শুধুমাত্র ব্যাটারদেরই দাপট ছিল তেমনটা নয়। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে এই বিশ্বকাপেই প্রথম হ্যাট্রিক করেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লি।  

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে শুরুটা নিজেদের মতো করে রাঙিয়েছিল বাংলাদেশ। মোহাম্মদ আশরাফুলের ২৭ বলে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করেই প্রথম ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের ১৬৪ রান টাইগাররা টপকে যায় অনায়েসে। সেই ম্যাচে আফতাব আহমেদ খেলেন ৪৯ বলের ৬২ রানের এক চোখ ধাঁধানো ইনিংস। তবে এ আসরে তারপর আর জয়ের মুখ দেখে নি টাইগাররা। ৫টি ম্যাচের মধ্যে ৪টি ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। 


বিজ্ঞাপন


২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নতুন মাত্রা পায় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ভারত-পাকিস্তান দুবার পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ায়। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ডারবানে অদ্ভুত এক নিয়মে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। টাই হওয়া ম্যাচ ভারত জিতে নেয় 'বোল আউট'-এর মাধ্যমে। সেই ম্যাচেই বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বের পরিচয় দেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি।

উদ্বোধনী আসরের ফাইনালটাও ছিল স্মরণীয়। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানকে হারিয়ে ভারত সেই আসরের শিরোপা জিতে নেয়। জোহানেসবার্গে ফাইনালটি ছিল চরম উত্তেজনায় ভরপুর। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত-পাকিস্তানের ভয়ংকর বোলিং আক্রমণের  বিপক্ষে ৫ উইকেটে ১৫৭ রান।   

১৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটারদের দৃঢ়তায় দারুণ সূচনা পায় মিসবাহ বাহিনী। তবে দলের মিডেল অর্ডারের ব্যার্থতায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে পাকিস্তান দল। শেষ ওভারে দেখা দেয় নাটকীয়তার। ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা সেটা আবারও প্রমাণ হয়ে সেই ওভারে। মিসবাউল হকের স্কুপ শট ফাইন লেগে তালুবন্ধি করেন শ্রিশান্ত। এর সাথেই শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন। মাহেন্দ্র সিং ধোনির হাতে উঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপা।   

এমএএম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর